সিরামিক সামগ্রী তৈরীর ১০/১২টি কোম্পানী নেত্রকোণার ভারতীয় সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর
উপজেলায় অবাধে গারো টিলা কেটে সাদামাটি উত্তোলন করায় বসত বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হচ্ছে আদিবাসীরা। স্থানীয় প্রশাসন বলছে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় তারা কিছু করতে
পারছেন না। এ নিয়ে স্থানীয় আদিবাসীরা
আন্দোলন সংগ্রাম করলেও তা বন্ধ হচ্ছে না।
স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকাবাসী জানান, খনিজ সম্পদ বিভাগ ১৯৮৩ সালে ভূতাত্ত্বিক জরিপ শেষে দূর্গাপুর উপজেলায় সাদা মাটি পাওয়া যাওয়ার কথা
জানায়। জরিপে বিজয়পুরে ১৪ কিলোমিটার এলাকায় ১৫ থেকে ৪০ মিটার উচু অসংখ্য সাদা মাটির
টিলাতে ভূপৃষ্ঠের ৬০ মিটার গভীর পর্যন্ত দুই দশমিক ৪৭ মিলিয়ন টন সাদা মাটির মজুদ পাওয়া
যায়। এর পর থেকে দেশের বেঙ্গল ফাইন সিরামিক ইন্ডাষ্ট্রিজ, মেসার্স মোমেনশাহী সিরামিক এন্ড গ্লাস ফ্যাক্টরী, মেসার্স চায়না বাংলা সিরামিক ইন্ডাষ্ট্রীজ লিমিটেডসহ ১০/১২টি
মাইনিং কোম্পানি মাটি উত্তোলন করছে।
বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের সহসভাপতি সম্রাট হাজং জানান,
এসব কোম্পানীর হয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী এজেন্টরা
এই মাটি উত্তোলন কাজ নিয়ন্ত্রন করে আসছে। তারা অবাধে ও অপরিকল্পিতভাবে
টিলাগুলোতে গভীর খনন করায় আদিবাসীরা তাদের বাড়ি ঘর নিয়ে থাকতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে তাদের আদি নিবাস ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হচ্ছে।
আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ দূর্গাপুর শাখার সম্পাদক স্বপন হাজং জানান, ৫ বছরে অর্ধশতাধিক আদিবাসি পরিবার তাদের বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ
হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের সম্পাদক পল্টন হাজং বলেন, দেশের একমাত্র বিজয়পুরের এই খনিজ সম্পদ সাদামাটি উত্তোলনে নীতিমালা
প্রনয়ন করে আদিবাসীদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের
কাছে দাবী জানান।
দূর্গাপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল সায়াদাৎ বাবুল বলেন, সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকায় সাদামাটি উত্তোলনে স্থানীয় প্রশাসন
তত্ত্বাবধান করতে পারছে না। একারনেই আদিবাসীদের
উচ্ছেদ রোধে স্থানীয় প্রশাসন সফলতার সাথে কাজ করতে পারছে না। তিনি জানান,
বিষয়টি প্রধান মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপকে অবহিত করা হয়েছে।
প্রতিবেদন : লাভলু পাল চৌধুরী
No comments:
Post a Comment